December 22, 2024, 8:30 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
জঙ্গি তৎপরতার বিষয়ে নিয়মিত হালনাগাদ তথ্য জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের। মাঠ পর্যায়ের এসব কর্মকর্তার বিশেষ কোনও মতামত বা সুপারিশ থাকলে সেটাও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক শাখাকে জানাতে বলা হয়েছে।
সূত্র জানায়, জুনের প্রথম দিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয় এই নির্দেশনা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সই করা নির্দেশনামূলক একটি প্রতিবেদন গত ৬ জুন পাঠানো হয় সব সংস্থার প্রধানদের কাছে। সেখানে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকানোর জন্য সংঘটিত সন্ত্রাসী ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের প্রচলিত আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছিল তিন হাজার ৭৮৬টি। এরমধ্যে অভিযোগপত্র দেওয়া হয় ৩ হাজার ৫৪৯টির। চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে ১৮৬টি মামলার। নানা কারণে এখনও তদন্ত শেষ হয়নি ৫১টি মামলার। এছাড়া ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ওই বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত সারা দেশে সহিংসতার ঘটনায় দায়ের হয়েছিল এক হাজার ৮২৬টি মামলা। অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে এক হাজার ৭৮৯টির, আর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয় ৩৩টি মামলার। ৪টি মামলা এখনও তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তাধীন মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ করা, অভিযোগপত্র দেওয়া মামলাগুলোর বিচার প্রক্রিয়া মনিটরিং করা এবং স্থগিত মামলাগুলো সচল করার ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সদর দফতরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গুলশানের হলি আর্টিজানে ২০১৬ সালের ১ জুলাই ঘটেছিল ইতিহাসের নজিরবিহীন ঘটনা। সেদিন বাংলাদেশে জঙ্গিদের মরণছোবল দেখেছিল গোটা দুনিয়া। বিদেশি নাগরিকসহ নৃশংস হতাহতের ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে পড়ে সর্বস্তরের মানুষ। এরপরই পুলিশ ও র্যাবসহ সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নতুন করে ঢেলে সাজানো হয়। জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ ও দমনে নেওয়া হয় নানা পদক্ষেপ।
হলি আর্টিজানে হামলা ঘটনার পর ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ‘কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)’ নামে একটি বিশেষায়িত টিম থাকলেও পরে ‘অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট’ নামে পুলিশের আলাদা বিশেষায়িত ইউনিট গঠন করা হয়। বর্তমানে জঙ্গি তৎপরতা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও নির্মূল হয়নি এখনও। মাঝে মধ্যেই জঙ্গিরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চায়। গত বছরের (২০২২) ২০ নভেম্বর রাজধানীর পুরান ঢাকার আদালত পাড়া থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি— আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ও মাইনুল হাসান শামীমকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনাটিও ভাবিয়ে তোলে সবাইকে। তাদের অবস্থান সম্পর্কে এখনও সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য দিতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো।
উগ্রবাদীরা কোরআন ও হাদিসের অপব্যাখ্যা দিয়ে বিকৃত প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে জনগণকে সন্ত্রাসবাদে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে আসছে। পুলিশের উদ্যোগে সেগুলোর কাউন্টার ন্যারেটিভ বা প্রকৃত ব্যাখ্যা দেওয়ার মাধ্যমে জঙ্গি ও উগ্রবাদ প্রতিরোধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ইমামদের মাধ্যমে জুমার নামাজের খুতবায় জনসাধারণকে সচেতন করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতেও সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী প্রচারণা অব্যাহত রাখা হয়েছে।
Leave a Reply